রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘ’র্ষের ঘটনায় আহত দোকান কর্মচারী মো. মুরসালিন (২৪) মা’রা গেছেন।
বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ নিয়ে এ ঘটনায় দুজনের মৃ’ত্যু হলো।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দিনের সংঘ’র্ষে আ’হত হন মুরসালিন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃ’ত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃ’ত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিউমার্কেটের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে মুরসালিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় আরও দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন মো. ইয়াসিন (১৮) ও মো. কানন চৌধুরী (২০)।
নিহত মুরসালিনের ভাই নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার ভাই নিউমার্কেটের নিউ সুপার মার্কেটে একটি প্যান্টের দোকানের কর্মচারী ছিল। সে কামরাঙ্গীরচরে পশ্চিম রসুলপুর এলাকায় থাকতো।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ (১৮) নামে এক ডেলিভারিম্যান ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা’রা যান। ওই দিন কামরাঙ্গীরচরে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন নাহিদ। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হন তিনি।
সোমবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘ’র্ষ। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
বুধবারও ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। তিন দিনের এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তারা হলেন- ঢাকা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের নাসিম, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লিটন ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের আবদুল্লাহ আল মাসউদ। চিহ্নিত তিনজনই ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগকর্মী বলে জানা গেছে। এদিকে সংঘর্ষের জেরে টানা দুদিন বন্ধ থাকার পর আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে খুলছে নিউমার্কেট।
মোরসালিন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কালাইনগর গ্রামের প্রয়াত মানিক মিয়ার ছেলে। তিনি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম রসুলপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। তার স্ত্রীর নাম অনি আখতার মিতু। তাদের হুমাইরা ইসলাম লামহা ও আমির হামজা নামে দুই সন্তান রয়েছে।
ঘটনার দিন মোরসালিনের স্ত্রী মিতু সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নিউমার্কেটে একটি শার্টের দোকানে মাসে নয় হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন তার স্বামী। মঙ্গলবার সকালে নিউমার্কেটে কর্মস্থলের উদ্দেশে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। দুপুরে ইটের আঘাতে আহত হন তিনি।