জাতীয়: সিলেটে আবুল মাল আবদুল মুহিতের জানাজার নামাজের আগে ব্ক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সিলেটের মানুষ শোক-শ্রদ্ধায় গতকাল রবিবার চিরবিদায় জানিয়েছেন ‘আলোকিত সিলেট’-এর প্রবক্তা মুহিতকে। কিন্তু তাঁর মৃত্যু পরবর্তীসময়ে কিছু ঘটনায় ক্ষোভ ও নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে জনমনে।
সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় রীতি অনুযায়ী জানাজা না হওয়া, তাঁর মরদেহ সড়কপথে সিলেটে নিয়ে আসা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমালোচনা চলছে। তবে মুহিত পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,
এ নিয়ে ভিন্ন কিছু ভাবার কারণ নেই। সামগ্রিক বাস্তবতায়ই এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। মরদেহ নিয়ে পরিবারের সবাই একসঙ্গে আসতে চাওয়ায় সড়ক পথে নিয়ে আসা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করে আওয়ামী লীগের তৃণমূল এক নেতা বলেন,
‘কত ছোটখাটো ব্যক্তির বেলা হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। আর উনার মতো একজন বড় মাপের মানুষ, যিনি দেশের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন, তাঁকে কী হেলিকপ্টারে আনা যেত না। তিনি আমাদের সিলেটের গর্বের ধন। বিষয়টা আমাদের কষ্ট দিয়েছে।’
একইভাবে সিলেটের এক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তিনি সিলেটের জন্য, দেশের জন্য অনেক কাজ করেছেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু পরবর্তীসময়ে শেষযাত্রায় ব্যবস্থাপনায় অবহেলা ছিল মনে হয়েছে।’
ফেসবুকেও এ নিয়ে অনেকে ক্ষো’ভ জানিয়েছেন। ফাইজুল লতিফ চৌধুরী নামে একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘একটি জানাজা যথেষ্ট ছিল। লাশ প্রদর্শন ঠিক হয়নি। সকাল ১০টার মধ্যে জানাজা করে লাশ হেলিকপ্টার অ্যাম্বুল্যান্সে সিলেট নিয়ে যোহরের পরেই দাফন সম্ভব ছিল।’ খালেদ আহমদ লিখেছেন, ‘বেদনাদায়ক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সিলেটবাসীর প্রত্যাশিত নয়।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের এক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আবুল মাল আবদুল মুহিতের পরিবার সেটা নেননি। পরিবার থেকে এমন সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছিল সে বিষয়ে আমাদের জানা নেই। তবে উনার যেহেতু বয়স হয়েছিল, শরীরের অবস্থা বিবেচনা করেই ফ্রিজিং অ্যাম্বুল্যান্সে আনা হয়েছে, হেলিকপ্টারে আনা হয়নি। যে ফ্রিজিংভ্যানে করে মরদেহ আনা হয়েছে তা খুব উন্নতমানের ছিল। এ ধরনের ফ্রিজিং অ্যাম্বুল্যান্স সিলেটে নেই।’
এসব বিষয়ে কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে কষ্ট পাওয়ার কিংবা ভিন্ন কিছু ভাবার কারণ নাই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের হেলিকপ্টার অফার করেছিলেন, কিন্তু আমরা নেইনি। পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত হয়েছে সড়ক পথে ভাইয়ের মরদেহ সিলেটে আসার।’ হেলিকপ্টারে আনা যেত কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সামগ্রিক বাস্তবতায় যেটা ভালো মনে হয়েছে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেখুন আমার ভাই মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু এর আগে আমার দাদাও মন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি পঁচিশ বছর মন্ত্রিত্ব করেছিলেন। সুতরাং শো’আপের এখানে কিছু নেই।’