বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ক্যালগেরি প্রবাসী সোহাগ হাসানের মা এ বছর রত্নগর্ভা সম্মাননা পেলেন। মা দিবসের বিশেষ অনুষ্ঠানে যে ২৫ জন
রত্নগর্ভা মা’দের সম্মাননা প্রদান করা হয় তারমধ্যে সোহাগ হাসানের মা মিসেস ফয়েজুন্নেছা বেগম অন্যতম। আট সন্তানের জননী মিসেস ফয়েজুন্নেছার স্বামী প্রকৌশলী আব্দুল সাত্তার বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত চাঁদপুরে
বসবাস করেন। আট সন্তানের প্রত্যেকেই দেশে বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষিত হয়ে দেশে-বিদেশে মর্যাদাসম্পন্ন চাকরিতে নিয়োজিত রয়েছেন। ভাই বোনের মধ্যে সোহাগ হাসান পঞ্চম।
প্রবাসী সোহাগ হাসানের বড় ভাই ইসমে আজম পনির আমেরিকা থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিএসসি এবং এমবিএ সম্পন্ন করে দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকার এটিএন টি’র প্রিন্সিপাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।
অন্যদিকে সোহাগ হাসান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আলবার্টার সাউদার্ন আলবার্টা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পিপিডি ডিগ্রি সম্পন্ন করে বর্তমানে আগাড ওয়েল এন্ড গ্যাস ল্যাবে কর্মরত রয়েছেন।
উল্লেখ্য, মিসেস ফয়েজুন্নেছার বাকি ছয় সন্তানের মধ্যে জান্নাতুল মাওয়া চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি বেসরকারি এনজিওতে কর্মরত। এ এস এম মঈন ডুয়েট থেকে বিএসসি ইন্জিনিয়ারিং (সিভিল) সম্পন্ন করে বর্তমানে ঢাকা আনোয়ার গ্রুপে ডিরেক্টর (অপারেশন) কর্মরত। গাউছুল আজম, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে
এমএসএস সম্পন্ন করে বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আহসান হাবীব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ ও পরবর্তীতে ডিপ্লোমা ইন মাল্টিমিডিয়া সম্পন্ন করে বর্তমানে ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ক্লিক অন মার্কেটিং কমিউনিকেশনস লিমিটেডে কর্মরত। জান্নাতুল নাঈম, ইডেন মহিলা কলেজ থেকে (সমাজ বিজ্ঞান) এমএ সম্পন্ন করে সামাজিক সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত।
এবং মিসেস ফয়জুন্নেসার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান জান্নাতুল ফেরদাউস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (উদ্ভিদবিজ্ঞান) এমএসসি এবং পিএইচডি সম্পন্ন করে বর্তমানে রাজশাহী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মিসেস ফয়েজুন্নেছার বড় সন্তান ইসমে আজম পনির গণমাধ্যমকে বলেন, সন্তানেরা মাকে ঘিরেই রচনা করে ভালোবাসার পৃথিবী। মায়ের হাসি যে সন্তানের জন্য উৎসর্গ থাকে তার মতো সৌভাগ্যবান সন্তান আর কেউ নয়।
মাকে খুশি করাই সব সন্তানের ব্রত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। মাতৃত্বেই সকল মায়া, মমতা ও ভালোবাসার শুরু এবং শেষ। তিনি আরো বলেন, ছোট বেলা থেকেই দেখেছি কিভাবে মা তার শাসন আর ভালোবাসা দিয়ে আমাদের আগলে রেখেছেন, তারই ফলশ্রুতি আজকের রত্নগর্ভা সম্মাননা। আবেগে আপ্লুত হয়ে কন্ঠশিল্পী সোহাগ হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, জন্মদাত্রী মা! প্রবাসে প্রতিটা ক্ষণ যাকে খুব মিস করি,
যার কল্যাণে পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখা সেই মা আজ রত্নগর্ভা সম্মাননা নিচ্ছে এর চাইতে বড় আনন্দ সন্তানের আর কিছুই হতে পারে না। তিনি আরো বলেন, নৈতিক চরিত্র ও মূল্যবোধের শিক্ষা সন্তানকে মা-ই দিয়ে থাকেন। একজন আদর্শ মা সন্তানের পাশে থাকেন বিপদে বন্ধু হিসেবে। হতাশায় আশার আলোকবর্তিকা হয়ে। অসহায় অবস্থায় অভিভাবক হয়ে। সর্বোপরি সকল পরিস্থিতিতে স্নেহ-দয়া ও ভালোবাসার অপার ভাণ্ডার হলেন মা। সবাই আমার রত্নগর্ভা মার জন্য দোয়া করবেন।
রত্নগর্ভা সম্মাননা পাওয়ায় মিসেস ফয়েজুন্নেছা ভালবাসা আবেগ আর আনন্দে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমিও কোনো মায়ের সন্তান। এই আনন্দ সব সন্তানদের আনন্দ। পূথিবীর সব মায়েদের আনন্দ। তিনি আরো বলেন, আমাদের মনে রাখা উচিত আজ যিনি সন্তান, তিনিই আগামী দিনের বাবা কিংবা মা। বৃদ্ধ বয়সে এসে মা-বাবারা যেহেতু শিশুদের মতো কোমলমতি হয়ে যায়, তাই তাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরি করাই সন্তানের কর্তব্য। পরিশেষে তিনি রত্নগর্ভা সম্মাননা দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। উল্লেখ্য, সোহাগ হাসানের মা রত্নগর্ভা সম্মাননা পাওয়ায় ক্যালগেরির প্রবাসী বাঙালিরা পৃথক পৃথকভাবে সোহাগ হাসান ও রত্নগর্ভা মাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।